অসাধারণ হতে কে না চায়? ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া সহজ। কোন কিছু করার চেষ্টা না করা কিংবা সবাই যা করে, তা-ই করা সাধারণ হয়ে ওঠার পথ। কিন্তু আমরা কি সত্যিই সাধারণ কেউ হতে চাই? অধিকাংশই চাই না, তবুও আমরা প্রতিনিয়ত একই রকম রুটিন মেনে চলি এবং নিজেদের উন্নত করার চেষ্টা করি না। অথচ অসাধারণ হতে হলে অন্যদের থেকে একটু বেশি চেষ্টা করতে হয়। একটু বেশি, বেশি বেশি না।
কিভাবে অসাধারণ হওয়া যায়?
নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ চেষ্টা করা: প্রতিদিন আগের দিনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা। এর বেশি কিছু করতে হবে না। আপনি যদি প্রতিদিন ১% উন্নতি করতে পারেন, তবে এক বছর পর আপনার উন্নতি কতদূর পৌঁছাবে? অনেক দূর! এক্ষেত্রে ছোট ছোট পদক্ষেপই বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
কেন আমরা উন্নতি করতে পারি না?
আমাদের প্রধান সমস্যা হলো আমরা সবকিছু আগামী দিনের জন্য রেখে দেই। এর ফলে অনেকগুলি অনুৎপাদনশীল দিন পেছনে ফেলে আসি। পেছনের দিনগুলোতে যা করেছি, তাই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে। যদি আমাদের বর্তমান খারাপ হয়, তার জন্য দায়ী পেছনের অনুৎপাদনশীল দিনগুলো।
এভারেজ না হতে চাইলে কী করতে হবে?
বর্তমানকে গুরুত্ব দিন: ভবিষ্যতের কথা ভেবে বর্তমানকে অবহেলা করবেন না। আজ এবং এখনকার সময়টাতেই ফোকাস করুন। সামনে যে কাজটি আছে, সেটাতেই সর্বোচ্চ মনোযোগ দিন।
- খাওয়া-দাওয়া: খাওয়ার সময় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিন।
- ঘুম: ঘুমানোর সময় মোবাইল পাশে রাখবেন না।
- মুভি দেখা: মুভি দেখার সময় শুধুমাত্র মুভিতেই মনোযোগ দিন।
- কাজ: কাজ করার সময় সম্পূর্ণ মনোযোগ কাজেই দিন।
নিজেকে অন্যদের সাথে তুলনা করবেন না
আমাদের থেকে সেরা অনেকেই আছে, থাকবে। তাদের সাথে তুলনা না করে প্রতিদিন নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। একদিন দেখবেন, আপনি সবার থেকে সেরা হয়ে উঠেছেন। শুধু একটু বাড়তি চেষ্টা করে, বেশি কিছু নয়।
অসাধারণ হওয়ার কিছু কার্যকরী টিপস
১. নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করুন: আপনার জীবনের জন্য কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করুন এবং সেগুলো অর্জনের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করুন।
২. রুটিন মেনে চলুন: একটি ভালো রুটিন মেনে চললে সময় ব্যবস্থাপনা সহজ হবে এবং আপনি আপনার লক্ষ্যগুলোর দিকে এগিয়ে যেতে পারবেন।
৩. নতুন কিছু শিখুন: প্রতিদিন নতুন কিছু শিখার চেষ্টা করুন। এটি আপনার জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়াবে এবং আপনাকে সবার থেকে আলাদা করবে।
৪. পজিটিভ থাকুন: নেতিবাচক চিন্তাভাবনা থেকে দূরে থাকুন এবং সবসময় পজিটিভ থাকুন। এটি আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৫. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন: নিয়মিত ব্যায়াম করুন, সঠিক খাদ্য গ্রহণ করুন এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন। সুস্থ দেহেই সুস্থ মন থাকে।
৬. মানুষের সাথে ভাল সম্পর্ক বজায় রাখুন: পরিবারের সদস্য, বন্ধু এবং সহকর্মীদের সাথে ভাল সম্পর্ক বজায় রাখুন। এটি আপনার মানসিক শান্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৭. নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন: সবসময় নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন। আপনি যা করতে পারেন তা অন্য কেউ করতে পারবে না।
সাফল্যের গল্পগুলো থেকে অনুপ্রেরণা নিন
বিশ্ব বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনের গল্পগুলো পড়ুন এবং তাদের সাফল্যের পথে কিভাবে এগিয়ে গেছেন তা জানুন। এ থেকে আপনি অনেক অনুপ্রেরণা পেতে পারেন এবং নিজের জীবনে প্রয়োগ করতে পারেন।
নিজেকে প্রতিদিন নতুনভাবে চ্যালেঞ্জ করুন
প্রতিদিন নিজের সামর্থ্যের সীমা অতিক্রম করার চেষ্টা করুন। আপনি যতই নিজেকে চ্যালেঞ্জ করবেন, ততই আপনার দক্ষতা ও যোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।
শেষ কথা
অসাধারণ হতে হলে আপনাকে একটু বাড়তি চেষ্টা করতে হবে। প্রতিদিনের ছোট ছোট পদক্ষেপই একদিন বড় সাফল্য এনে দিবে। তাই আজ থেকেই শুরু করুন এবং নিজের জীবনের প্রতি গুরুত্ব দিন। আপনার প্রতিদিনের উন্নতি একদিন আপনাকে অসাধারণ করে তুলবে।
অসাধারণ হওয়ার যাত্রা শুরু হোক আজ থেকেই!